রাশিয়া জাতীয় ফুটবল দল
ডাকনাম | সবোরনিয়া (জাতীয় দল) | ||
---|---|---|---|
অ্যাসোসিয়েশন | রুশ ফুটবল ইউনিয়ন | ||
কনফেডারেশন | উয়েফা (ইউরোপ) | ||
প্রধান কোচ | স্তানিস্লাভ চেরচেসভ | ||
অধিনায়ক | আর্তেঁম জিউবা | ||
সর্বাধিক ম্যাচ | সার্জেই ইগনাশেভিচ (১২৭) | ||
শীর্ষ গোলদাতা | আলেক্সান্দ্রা কেযরাকোভ (৩০) | ||
মাঠ | বিভিন্ন | ||
ফিফা কোড | RUS | ||
ওয়েবসাইট | rfs | ||
| |||
ফিফা র্যাঙ্কিং | |||
বর্তমান | ৩৮ (২১ ডিসেম্বর ২০২৩)[১] | ||
সর্বোচ্চ | ৩ (এপ্রিল ১৯৯৬) | ||
সর্বনিম্ন | ৭০ (জুন ২০১৮) | ||
এলো র্যাঙ্কিং | |||
বর্তমান | ৩২ (১২ জানুয়ারি ২০২৪)[২] | ||
সর্বোচ্চ | ৭ (আগস্ট ২০০৯) | ||
সর্বনিম্ন | ৫০ (মার্চ ২০১৭) | ||
প্রথম আন্তর্জাতিক খেলা | |||
ফিনল্যান্ড ২–১ রুশ সাম্রাজ্য (স্টকহোম, সুইডেন; ৩০ জুন ১৯১২) | |||
বৃহত্তম জয় | |||
সোভিয়েত ইউনিয়ন ১১–১ ভারত (মস্কো, সোভিয়েত ইউনিয়ন; ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৫৫)[৩] ফিনল্যান্ড ০–১০ সোভিয়েত ইউনিয়ন (হেলসিঙ্কি, ফিনল্যান্ড; ১৫ আগস্ট ১৯৫৭) | |||
বৃহত্তম পরাজয় | |||
জার্মানি ১৬–০ রুশ সাম্রাজ্য (স্টকহোম, সুইডেন; ১ জুলাই ১৯১২) | |||
বিশ্বকাপ | |||
অংশগ্রহণ | ১১ (১৯৫৮-এ প্রথম) | ||
সেরা সাফল্য | চতুর্থ স্থান (১৯৬৬) | ||
উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ | |||
অংশগ্রহণ | ১২ (১৯৬০-এ প্রথম) | ||
সেরা সাফল্য | চ্যাম্পিয়ন (১৯৬০) | ||
কনফেডারেশন্স কাপ | |||
অংশগ্রহণ | ১ (২০১৭-এ প্রথম) | ||
সেরা সাফল্য | গ্রুপ পর্ব (২০১৭) |
রাশিয়া জাতীয় ফুটবল দল (রুশ: национа́льная сбо́рная Росси́и по футбо́лу) হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে রাশিয়ার প্রতিনিধিত্বকারী পুরুষদের জাতীয় দল, যার সকল কার্যক্রম রাশিয়ার ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা রুশ ফুটবল ইউনিয়ন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই দলটি ১৯১২ সাল হতে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার এবং ১৯৫৪ সাল হতে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা উয়েফার সদস্য হিসেবে রয়েছে। ১৯১২ সালের ৩০শে জুন তারিখে, রাশিয়া রুশ সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেছে; সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠিত উক্ত ম্যাচে রাশিয়া ফিনল্যান্ডের কাছে ২–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে।
সবোরনিয়া নামে পরিচিত এই দলটি বেশ কয়েকটি স্টেডিয়ামে তাদের হোম ম্যাচগুলো আয়োজন করে থাকে। এই দলের প্রধান কার্যালয় রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় অবস্থিত। বর্তমানে এই দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন স্তানিস্লাভ চেরচেসভ এবং অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন জিনিত সেন্ট পিটার্সবার্গের আক্রমণভাগের খেলোয়াড় আর্তেঁম জিউবা।
রাশিয়া এপর্যন্ত ১১ বার ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে সেরা সাফল্য হচ্ছে ১৯৬৬ ফিফা বিশ্বকাপে চতুর্থ স্থান অর্জন করা, যেখানে তারা সোভিয়েত ইউনিয়ন হিসেবে পর্তুগালের কাছে ২–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে। অন্যদিকে, উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে রাশিয়া অন্যতম সফল দল, যেখানে তারা ১টি (১৯৬০) শিরোপা জয়লাভ করেছে।
সার্জেই ইগনাশেভিচ, ইগর আকিনফিভ, ভিক্তর ওনোপকো, আলেক্সান্দ্রা কেযরাকোভ এবং আর্তেঁম জিউবার মতো খেলোয়াড়গণ রাশিয়ার জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাবার পর রাশিয়া দল প্রথমবারের মতো মেক্সিকোর বিপক্ষে আন্তর্জাতিক খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ১৯৯২ সালের ১৬ই আগস্ট তারিখে মস্কোতে অনুষ্ঠিত খেলায় দলটি ২–০ ব্যবধানে বিজয়ী হয়। এ খেলায় অন্যান্য প্রজাতন্ত্রে জন্মগ্রহণকারী সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের খেলোয়াড়গণ অংশগ্রহণ করেছিলেন।
ম্যানেজার পাভেল সাদিরিনের অধীনে ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল বাছাইপর্বের ৫নং গ্রুপে গ্রিস, আইসল্যান্ড, হাঙ্গেরি এবং লুক্সেমবুর্গের বিপক্ষে অংশগ্রহণ করে। যুগোস্লাভিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় এ গ্রুপে ৫টি দল ছিল। ৬ জয় ও ২ ড্র করে গ্রীসের সাথে রাশিয়াও বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। প্রতিযোগিতায় শক্তিশালী দল হিসেবে বিবেচিত না হলেও তারা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করে। স্তানিস্লাভ চেরচেসভ, আলেক্সান্দ্র বরোদিউকসহ ভিক্তর ওনোপকো, ওলেগ সালেঙ্কো, আলেক্সান্দ্র মস্তোভোই, ভ্লাদিমির বেচাস্তনিখ এবং ভালেরি কারপিনের মতো খেলোয়াড়গণ ছিলেন। এর মধ্যে কিছু রুশ খেলোয়াড় ছিলেন ইউক্রেনের। কিন্তু ইউক্রেনীয় ফুটবল ফেডারেশন ঐ বিশ্বকাপে তাদেরকে ইউক্রেন ফুটবল দলে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রেখেছিল।[৪]
ওলেগ রোমান্তসেভের নির্দেশনায় ২০০২ সালের ফিফা বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে রুশ দল সাত জয়, দুই ড্র এবং একটিমাত্র পরাজয় নিয়ে প্রথম স্থান অধিকারের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে যৌথভাবে অনুষ্ঠিত ২০০২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। ১নং গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল স্লোভেনিয়া, সার্বিয়া, সুইজারল্যান্ড, ফারো দ্বীপপুঞ্জ এবং লুক্সেমবুর্গ। তারাবিশ্বকাপের মূল পর্বের এইচ গ্রুপে বেলজিয়াম, তিউনিসিয়া ও জাপানের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। গ্রুপটি প্রতিযোগিতার সর্বাপেক্ষা দূর্বলতম গ্রুপ হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। তিউনিসিয়ার বিপক্ষে ২–০ ব্যবধানে জয়ী হলেও জাপানের বিপক্ষে তাদের ০–১ ব্যবধানে পরাজয়ের ফলে মস্কোর রাস্তায় দাঙ্গা বেঁধে যায়।[৫] শেষ খেলায় ড্র হলেই পরবর্তী পর্বে উত্তোরণ ঘটবে। এ অবস্থায় বেলজিয়ামের বিপক্ষে খেলতে নেমে ৩–২ ব্যবধানে পরাজিত হওয়ায় বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয় রাশিয়ার।
র্যাঙ্কিং
[সম্পাদনা]ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে, ১৯৯৬ সালের এপ্রিল মাসে প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে রাশিয়া তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবস্থান (৩য়) অর্জন করে এবং ২০১৮ সালের জুন মাসে প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে তারা ৭০তম স্থান অধিকার করে, যা তাদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে রাশিয়ার সর্বোচ্চ অবস্থান হচ্ছে ৭ম (যা তারা ২০০৯ সালে অর্জন করেছিল) এবং সর্বনিম্ন অবস্থান হচ্ছে ৫০। নিম্নে বর্তমানে ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিং এবং বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে অবস্থান উল্লেখ করা হলো:
- ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিং
অবস্থান | পরিবর্তন | দল | পয়েন্ট |
---|---|---|---|
৩৬ | স্কটল্যান্ড | ১৫০৬.৮৯ | |
৩৭ | তুরস্ক | ১৫০৫.২৮ | |
৩৮ | রাশিয়া | ১৪৯৮.৮৪ | |
৩৯ | চেক প্রজাতন্ত্র | ১৪৯৪.০৪ | |
৪০ | চিলি | ১৪৮৯.৮২ |
- বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং
অবস্থান | পরিবর্তন | দল | পয়েন্ট |
---|---|---|---|
৩০ | ২৩ | পানামা | ১৭৬৫ |
৩১ | ৪ | চেক প্রজাতন্ত্র | ১৭৫৭ |
৩২ | রাশিয়া | ১৭৫৬ | |
৩৩ | ২ | নরওয়ে | ১৭৫৫ |
৩৩ | ১২ | ভেনেজুয়েলা | ১৭৫৫ |
প্রতিযোগিতামূলক তথ্য
[সম্পাদনা]ফিফা বিশ্বকাপ
[সম্পাদনা]ফিফা বিশ্বকাপ | বাছাইপর্ব | ||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
সাল | পর্ব | অবস্থান | ম্যাচ | জয় | ড্র | হার | স্বগো | বিগো | ম্যাচ | জয় | ড্র | হার | স্বগো | বিগো | |
সোভিয়েত ইউনিয়ন হিসেবে | সোভিয়েত ইউনিয়ন হিসেবে | ||||||||||||||
১৯৩০ | অংশগ্রহণ করেনি | অংশগ্রহণ করেনি | |||||||||||||
১৯৩৪ | |||||||||||||||
১৯৩৮ | |||||||||||||||
১৯৫০ | |||||||||||||||
১৯৫৪ | |||||||||||||||
১৯৫৮ | কোয়ার্টার-ফাইনাল | ৬ষ্ঠ | ৫ | ২ | ১ | ২ | ৫ | ৬ | ৪ | ৩ | ০ | ১ | ১৬ | ৩ | |
১৯৬২ | কোয়ার্টার-ফাইনাল | ৬ষ্ঠ | ৪ | ২ | ১ | ১ | ৯ | ৭ | ৪ | ৪ | ০ | ০ | ১১ | ৩ | |
১৯৬৬ | ৩য় স্থান নির্ধারণী | ৪র্থ | ৬ | ৪ | ০ | ২ | ১০ | ৬ | ৬ | ৫ | ০ | ১ | ১৯ | ৬ | |
১৯৭০ | কোয়ার্টার-ফাইনাল | ৫ম | ৪ | ২ | ১ | ১ | ৬ | ২ | ৪ | ৩ | ১ | ০ | ৮ | ১ | |
১৯৭৪ | প্রত্যাহার | ৪ | ৩ | ০ | ১ | ৫ | ২ | ||||||||
১৯৭৮ | উত্তীর্ণ হয়নি | ৪ | ২ | ০ | ২ | ৫ | ৩ | ||||||||
১৯৮২ | দ্বিতীয় গ্রুপ পর্ব | ৭ম | ৫ | ২ | ২ | ১ | ৭ | ৪ | ৮ | ৬ | ২ | ০ | ২০ | ২ | |
১৯৮৬ | ১৬ দলের পর্ব | ১০ম | ৪ | ২ | ১ | ১ | ১২ | ৫ | ৮ | ৪ | ২ | ২ | ১৩ | ৮ | |
১৯৯০ | গ্রুপ পর্ব | ১৭তম | ৩ | ১ | ০ | ২ | ৪ | ৪ | ৮ | ৪ | ৩ | ১ | ১১ | ৪ | |
রাশিয়া হিসেবে | রাশিয়া হিসেবে | ||||||||||||||
১৯৯৪ | গ্রুপ পর্ব | ১৮তম | ৩ | ১ | ০ | ২ | ৭ | ৬ | ৮ | ৫ | ২ | ১ | ১৫ | ৪ | |
১৯৯৮ | উত্তীর্ণ হয়নি | ১০ | ৫ | ৩ | ২ | ২০ | ৭ | ||||||||
২০০২ | গ্রুপ পর্ব | ২২তম | ৩ | ১ | ০ | ২ | ৪ | ৪ | ১০ | ৭ | ২ | ১ | ১৮ | ৫ | |
২০০৬ | উত্তীর্ণ হয়নি | ১২ | ৬ | ৫ | ১ | ২৩ | ১২ | ||||||||
২০১০ | ১২ | ৮ | ১ | ৩ | ২১ | ৮ | |||||||||
২০১৪ | গ্রুপ পর্ব | ২৪তম | ৩ | ০ | ২ | ১ | ২ | ৩ | ১০ | ৭ | ১ | ২ | ২০ | ৫ | |
২০১৮ | কোয়ার্টার-ফাইনাল | ৮ম | ৫ | ২ | ২ | ১ | ১১ | ৭ | আয়োজক হিসেবে উত্তীর্ণ | ||||||
২০২২ | অনির্ধারিত | অনির্ধারিত | |||||||||||||
মোট | ৩য় স্থান নির্ধারণী | ১১/২৩ | ৪৫ | ১৯ | ১০ | ১৬ | ৭৭ | ৫৪ | ১১২ | ৭২ | ২২ | ১৮ | ২২৫ | ৭৩ |
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ "ফিফা/কোকা-কোলা বিশ্ব র্যাঙ্কিং"। ফিফা। ২১ ডিসেম্বর ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০২৩।
- ↑ ক খ গত এক বছরে এলো রেটিং পরিবর্তন "বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং"। eloratings.net। ১২ জানুয়ারি ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০২৪।
- ↑ "Soviet Union 11:1 India"। eu-football.info। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-২৩।
- ↑ Ukraine’s forgotten World Cup pedigree ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে, Business Ukraine (August 4, 2010)
- ↑ "Two die in Moscow World Cup rioting"। The Guardian। London। ১০ জুন ২০০২। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-০৬।
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]- Marc Bennetts (2008). Football Dynamo – Modern Russia and the People's Game. London: Virgin Books. আইএসবিএন ০-৭৫৩৫-১৩১৯-৬
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- দাপ্তরিক ওয়েবসাইট (রুশ) (ইংরেজি)
- ফিফা-এ রাশিয়া জাতীয় ফুটবল দল ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে (ইংরেজি)
- উয়েফা-এ রাশিয়া জাতীয় ফুটবল দল (ইংরেজি)