কলকাতা ট্রাম
কলকাতা ট্রাম | |||
---|---|---|---|
সংক্ষিপ্ত বিবরণ | |||
মালিকানায় | পশ্চিমবঙ্গ সরকার | ||
অবস্থান | কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত | ||
পরিবহনের ধরন | ট্রাম | ||
লাইনের (চক্রপথের) সংখ্যা | ৩ টি চালু, ২৫ টি বন্ধ | ||
দৈনিক যাত্রীসংখ্যা | ১৫,০০০ প্রতিদিন[১] | ||
চলাচল | |||
চালুর তারিখ | ২৪-০২-১৮৭৩ | ||
পরিচালক সংস্থা | পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন নিগম | ||
একক গাড়ির সংখ্যা | ২৫৭ (৩৫ টি বর্তমানে চালু আছে)[২] | ||
কারিগরি তথ্য | |||
মোট রেলপথের দৈর্ঘ্য | ২৮ কিলোমিটার | ||
বিদ্যুতায়ন | ৫৫০ ভোল্ট ডিসি ওভারহেড | ||
গড় গতিবেগ | ২০-৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা | ||
শীর্ষ গতিবেগ | ৬০ কিলোমিটার/ঘণ্টা | ||
|
কলকাতা ট্রাম ভারতের কলকাতা শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন ব্যবস্থা। এটি দেশের প্রথম ও একমাত্র পরিষেবা প্রদানকারী ট্রাম। এটি এশিয়ার প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রাম পরিবহন ব্যবস্থা। এই ট্রাম পরিষেবা প্রথম চালু হয় ১৮৭৩ সালে। প্রথমে ঘোড়ার সাহায্যে ট্রাম চালানো হতো ; পরবর্তীকালে ১৯০২ সালে বিদ্যুতের ব্যবহার হয়। কলকাতায় ক্রমবর্ধমান ফ্লাইওভার ও রাস্তা উন্নয়নের কারণে কয়েকটি ট্রামরুট এখন বন্ধ করে দেওয়া হলেও, অবশিষ্ট রুটগুলিকে দ্রুতগতির ট্রাম পরিবহনের উপযুক্ত করে তোলা হচ্ছে। এছাড়া ট্রামকে ঘিরে কলকাতায় একটি বিশেষ পর্যটন আকর্ষণও গড়ে তোলা হয়েছে, যেটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। বর্তমান পরিচালন সংস্থা নানা কারণ দেখিয়ে ট্রাম পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করলেও জনসচেতনতা ও আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে কলকাতার ট্রাম ব্যবস্থাকে সচল রাখার জন্য চেষ্টা করে ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি অসরকারি সংস্থা।[৩]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৮৭৩ সালে প্রথম আর্মেনিয়া ঘাট থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম ট্রাম চালু হয়। এই যাত্রা পথের দৈর্ঘ্য ছিল ৩.৯ কিলোমিটার (২.৪ মাইল)। কিন্তু যাত্রীর অভাবে এই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ক্যালকাটা ট্রামওয়েজ কোম্পানি নামে একটি লন্ডন ভিত্তিক কোম্পানি কলকাতায় ট্রাম পরিষেবা শুরু করে। প্রথম দিকে ঘোড়া টানা ট্রাম ব্যবহার করা হত। এই সময় ট্রাম কোম্পানিটির হাতে ১৭৭টি ট্রাম ও ১০০০ টি ঘোড়া ছিল। পরে স্টিম ইঞ্জিন ব্যবহৃত হত ট্রাম চালানোর জন্য। এই সময় ট্রাম কোম্পানির ১৯ মাইল ট্রাম লাইন ছিল। ১৯০০ সালের শুরুতে ১৪৩৫ এমএম (৪ ফুট ৮.৫ ইঞ্চি) স্ট্যান্ডার্ড গেজের ট্রাম লাইন চালু হয়। ১৯০২ সালে ট্রাম পরিষেবার বৈদ্যুতীকরন শুরু হয়; যেটি ছিল এশিয়ার প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রাম পরিষেবা। স্বাধীনতার কিছু পরে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ক্যালকাটা ট্রামওয়েজ কোম্পানিকে অধিগ্রহণ করে। বর্তমানে এটি ভারতের একমাত্র ট্রাম পরিসেবা।
কলকাতার ইতিহাসের ট্রাম কেন্দ্রিক দুর্ঘটনার কথা মনে ভাবলেই কবি জীবনানন্দ দাশের মৃত্যুর কথা উঠে আসে। যদিও তার মৃত্যুর ঘটনাটি দুর্ঘটনা না আত্মহত্যা তা নিয়ে আজও রহস্য বর্তমান।
রোলিং স্টক
[সম্পাদনা]- দুই-কামরা
- এক-কামরা : ২০১২ সালে এই এক কামরার ট্রাম চালু হয়। এটি দুইবগির ট্রামের থেকে অনেক দ্রুততর। কামরাটিও দীর্ঘকায়।
ট্রাম ডিপো ও টার্মিনাল
[সম্পাদনা]কলকাতা ট্রাম-এর ৭টি ট্রাম ডিপো রয়েছে; এগুলো হলোঃ বেলগাছিয়া, রাজাবাজার, পার্ক স্ট্রীট, গড়িয়াহাট, টালিগঞ্জ, কালিঘাট ও খিদিরপুর। আর, টার্মিনাল রয়েছে ৯টি; এগুলো হলোঃ শ্যামবাজার, গালিফ স্ট্রীট, বিধাননগর, বালিগঞ্জ, এসপ্লানেড, বিবাদি বাগ ও হাওড়া ব্রীজ।
- রাজাবাজার ও টালিগঞ্জ: আয়তন ও ট্রামের সংখ্যায় সবচেয়ে বড় ডিপো;
- খিদিরপুর: সবচেয়ে পুরোন ডিপো;
- কালীঘাট: সবচেয়ে ছোট ডিপো;
- এসপ্ল্যানেড: সবচেয়ে বেশি রুট রয়েছে এই টার্মিনালে;
- নোনাপুকুর, শিয়ালদহ: কলকাতা ট্রামের ওয়ার্কশপ এখানে অবস্থিত। একবগির ট্রামের কাজ হয় এখানে।
রুট
[সম্পাদনা]রুট সংখ্যা | রুট | গন্তব্য হইয়া | মোট কিমি |
---|---|---|---|
৫ | শ্যামবাজার–এসপ্ল্যানেড | হাতিবাগান, বিধান সরণি, বিদ্যাসাগর কলেজ, কলেজ স্ট্রিট, নির্মল চন্দ্র স্ট্রিট, ওয়েলিংটন, লেনিন সরণি | ৫.৫০ |
১১ | শ্যামবাজার–হাওড়া ব্রিজ | হাতিবাগান, বিধান সরণি, কলেজ স্ট্রিট, মহাত্মা গান্ধী রোড | ৫.৫০ |
১৮ | বিধাননগর–হাওড়া ব্রিজ (রাজাবাজার থেকে হাওড়া ব্রিজ এবং রাজাবাজার থেকে বিধান নগর রোডের সংক্ষিপ্ত রুট) | কাঁকুড়গাছি, মানিকতলা, রাজাবাজার, শিয়ালদহ, কলেজ স্ট্রিট, মহাত্মা গান্ধী রোড | ৭.৫০ |
২৪/২৯ | টালিগঞ্জ–বালিগঞ্জ জং | দেশপ্রাণ শাসমল রোড, রাসবিহারী, গড়িয়াহাট | ৫.৫০ |
২৫ | গড়িয়াহাট–এসপ্ল্যানেড (নোনাপুকুর পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত রুট) | বালিগঞ্জ ফাঁড়ি, বেকবাগান, পার্ক সার্কাস, মল্লিকবাজার, নোনাপুকুর, রাফি আহমেদ কিদওয়াই রোড, ওয়েলিংটন, লেনিন সরণি | ৬.০০ |
৩৬ | খিদিরপুর - এসপ্ল্যানেড | কার্ল মার্কস সরণি, খিদিরপুর রোড, ময়দান, ডাফেরিন রোড | ৫.০০ |
সম্প্রসারণ
[সম্পাদনা]সম্প্রসারণ পরিকল্পনা অনুযায়ী শহরের রাস্তায় নামতে চলেছে এক বগির আটটি ট্রাম। আটটি ট্রামের মধ্যে দু’টি ট্রাম শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ।[৪]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Kolkata's famed trams slowly drive into history"। The Hindu। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Bankrupt CTC to introduce two more AC trams"। The Times of India। ১৪ আগস্ট ২০১৩। ১৬ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ https://www.anandabazar.com/amp/west-bengal/kolkata/the-calcutta-tram-users-association-demands-the-return-of-trams-in-kolkata/cid/1533630।
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - ↑ "New One Coach Tram"। ২৪ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- সরকারি ওয়েবসাইট ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ মে ২০২৩ তারিখে
- ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশন ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ মে ২০২৩ তারিখে