নাই, মার খায় নাই, ছুটিয়া আসে নাই—না, কিছুই নয়; এম্নিভাবে জিজ্ঞাসা করিল, তোর নাম কি রে?
শ্রী—কা—ন্ত—
শ্রীকান্ত? আচ্ছা। বলিয়া সে তাহার জামার পকেট হইতে একমুঠা শুক্না পাতা বাহির করিয়া কতকটা নিজের মুখে পুরিয়া দিয়া কতকটা আমার হাতে দিয়া বলিল, ব্যাটাদের খুব ঠুকেছি—চিবো।
কি এ?
সিদ্ধি।
আমি অত্যন্ত বিস্মিত হইয়া কহিলাম, সিদ্ধি? এ আমি খাইনে।
সে ততোধিক বিস্মিত হইয়া কহিল, খাস্নে? কোথাকার গাধা রে! বেশ নেশা হবে—চিবো! চিবিয়ে গিলে ফ্যাল্।
নেশা জিনিসটার মাধুর্য্য তখন ত আর জানি নাই, তাই ঘাড় নাড়িয়া ফিরাইয়া দিলাম। সে তাহাও নিজের মুখে দিয়া চিবাইয়া গিলিয়া ফেলিল।
আচ্ছা, তা হ’লে সিগ্রেট খা। বলিয়া আর একটা পকেট হইতে গোটা-দুই সিগ্রেট ও দেশলাই বাহির করিয়া, একটি আমার হাতে দিয়া অপরটা নিজে ধরাইয়া ফেলিল। তারপরে, তাহার দুই করতল বিচিত্র উপায়ে জড়ো করিয়া সেই সিগ্রেটটাকে কলিকার মত করিয়া টানিতে লাগিল। বাপ রে— সে কি টান! একটানে সিগ্রেটের আগুন মাথা হইতে তলায় নামিয়া আসিল। চারিদিকে লোক—আমি অত্যন্ত ভয় পাইয়া গেলাম। সভয়ে প্রশ্ন করিলাম, চুরুট খাওয়া কেউ যদি দেখে ফ্যালে?
ফেল্লেই বা! সবাই জানে। বলিয়া স্বচ্ছন্দে সে টানিতে টানিতে রাস্তার মোড় ফিরিয়া আমার মনের উপর একটা প্রগাঢ় ছাপ মারিয়া দিয়া আর একদিকে চলিয়া গেল।