একপাশে পিয়ারী তাহার দলবল লইয়া নীরবে বসিয়া আছে। প্রতিদিনের মত আজ আর তাহার সহিত চোখোচোখি হইল না। সে যেন ইচ্ছা করিয়াই আর একদিকে চোখ ফিরাইয়া বসিয়াছিল।
উচ্ছ্বসিত প্রশ্নতরঙ্গ শান্ত হইয়া আসিলে জবাব দিতে সুরু করিলাম। কুমারজী কহিলেন, ধন্য সাহস তোমার শ্রীকান্ত! কত রাত্রে সেখানে পৌঁছুলে?
বারোটা থেকে একটার মধ্যে।
প্রবীণ ব্যক্তিটি কহিলেন, ঘোর অমাবস্যা। সাড়ে এগারোটার পর অমাবস্যা পড়িয়াছিল।
চারিপাশ হইতেই বিস্ময়সূচক ধ্বনি উত্থিত হইয়া ক্রমশঃ প্রশমিত হইলে কুমারজী পুনরায় প্রশ্ন করিলেন, তার পর? কি দেখ্লে?
আমি বলিলাম, বিস্তর হাড়গোড় আর মড়ার মাথা।
কুমারজী বলিলেন, উঃ, কি ভয়ঙ্কর সাহস। শ্মশানের ভেতরে ঢুক্লে, না বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলে?
আমি বলিলাম, ভেতরে ঢুকে একটা বালির ঢিপিতে গিয়ে বস্লুম।
তার পর, তার পর? বসে কি দেখলে?
ধূ-ধূ কর্ছে বালির চর।
আর?
কসাড় ঝোপ, আর শিমূলগাছ।
আর?
নদীর জল।
কুমারজী অধীর হইয়া কহিলেন, এসব ত জানি হে! বলি, সে সব কিছু—
আমি হাসিয়া ফেলিলাম। বলিলাম, আর গোটা-দুই বাদুড় মাথার উপর দিয়ে উড়ে যেতে দেখেছিলুম।