রাখিয়া না যাই, যাহার সূত্র ধরিয়া আবার একদিন আসিয়া উপস্থিত হইতে হয়।
অন্যমনস্ক হইয়া সেইখানেই বসিয়া ছিলাম; সন্ধ্যার সময় ধূনোচিতে ধূপ-ধূনা দিয়া সেটা হাতে করিয়া রজলক্ষ্মী এই বারান্দা দিয়াই আর একটা ঘরে যাইতেছিল; থমকিয়া দাঁড়াইয়া বলিল, মাথা ধরেচে, হিমে বসে কেন, ঘরে যাও।
হাসি পাইল। বলিলাম, অবাক্ কর্লে লক্ষ্মী! হিম এখানে কোথায়?
রাজলক্ষ্মী কহিল, হিম না থাক্ ঠাণ্ডা বাতাস ত বইচে। সেইটাই কোন্ ভাল?
না, সেও তোমার ভুল। ঠাণ্ডা গরম কোন বাতাসই বইচে না।
রাজলক্ষ্মী কহিল, আমার সমস্তই ভুল। কিন্তু মাথাধরাটা ত আর আমার ভুল নয়—সেটা ত সত্যি? ঘরে গিয়ে একটু শুয়েই পড় না? রতন কি কর্চে? সে কি একটু ওডিকোলন মাথায় দিতে পারে না? এ বাড়ির চাকরগুলোর মত ‘বাবু’চাকর আর পৃথিবীতে নেই। বলিয়া রাজলক্ষ্মী নিজের কাজে চলিয়া গেল।
রতন যখন ব্যস্ত এবং লজ্জিত হইয়া ওডিকোলন, জল প্রভৃতি আনিয়া হাজির করিল, এবং তাহার ভুলের জন্য বারংবার অনুতাপ প্রকাশ করিতে লাগিল, তখন আমি না হাসিয়া থাকিতে পারিলাম না।
রতন সাহস পাইয়া আস্তে আস্তে কহিল, এতে আমার যে দোষ নেই, সে কি আমি জানিনে বাবু? কিন্তু মাকে ত বল্বার জো নেই যে, তুমি রেগে থাক্লে মিছি মিছি বাড়িশুদ্ধ লোকের দোষ দেখ্তে পাও!
কৌতূহলী হইয়াই প্রশ্ন করিলাম, রাগ কেন?
রতন কহিল, সে কি কারো জান্বার জো আছে? বড়লোকের রাগ বাবু শুধু শুধু হয় আবার শুধু শুধুই যায়। তখন গা ঢাকা দিয়ে না থাকতে